এশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে। ইরানেও সম্প্রতি হামলা করেছে ইসরায়েল। এই দুই সংকটই থামানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ছাড়া, ইউরোপে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
বিগত কয়েক দশক ধরে ইরান-ইসরায়েল শত্রুতা ছিল অন্তরালে, কখনোই তেমন প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু ২০২৩ সালে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর এই দুই দেশ স্বল্প সময়ের মধ্যে তিন তিনবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ সংঘর্ষ টানা ৮ দিন ধরে চলছে। ইসরায়েলের দাবি, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি।
গাজা উপত্যকা ভয়াবহ ‘মানবসৃষ্ট খরা’র মুখোমুখি হয়েছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। পানির সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় শিশুরা এখন তৃষ্ণায় মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার মুখপাত্র জেমস এল্ডার।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের উচিত গাজা ও ইরানের পাশে দাঁড়ানো এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর প্রতিবাদ জানানো। একই সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের দরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
জাতিসংঘের শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো যুক্ত হলো ইসরায়েলের নাম। শিশু হত্যা, পঙ্গুত্ব, স্কুল ও হাসপাতালের ওপর হামলা এবং শিশুদের সশস্ত্র সংঘাতে নিয়োগ—এসব গুরুতর লঙ্ঘনের প্রমাণ থাকার ভিত্তিতেই তাদের এই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেও গাজায় নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আগের তুলনায় হামলার মাত্রাও কয়েকগুণ বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাজুড়ে ৯২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী—আইডিএফ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন এবং ইরানে চলমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গণহত্যার দিক থেকে অ্যাডলফ হিটলারকেও ছাড়িয়ে গেছেন।
শুধু বাংলাদেশই না, সারা পৃথিবীটাই একটা রণাঙ্গনে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধ বলতে যা বোঝায়, তার একটা চরম প্রদর্শনী হচ্ছে ইসরায়েলে। যুদ্ধবাজ এক জাতি তার নিরপরাধ প্রতিবেশী গাজা উপত্যকায় একটা মৃত্যুফাঁদ রচনা করে রক্তের উন্মুক্ত খেলায় মেতেছে। সেই জায়গা থেকে তারা অস্ত্রের মাধ্যমে অগ্রসর হচ্ছে ইরানে। ইরানের ক্ষম
গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ফের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। এতে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে আরও অন্তত ২১ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। গাজার চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের সব নাগরিকেরই জননিরাপত্তামূলক সুবিধা—যেমন বোমা আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহারের সমান অধিকার থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি শহর ও গ্রামগুলোতে ইহুদি জনপদের তুলনায় নিরাপদ আশ্রয়স্থলের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যেও থেমে নেই গাজায় হত্যাযজ্ঞ। গতকাল মঙ্গলবারও গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে ত্রাণপ্রার্থী বহু ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। কিন্তু পুরো বিশ্বের মনোযোগ ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের দিকে থাকায় চাপা পড়ে যাচ্ছে গাজায় চলমান নৃশংসতা।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের আল-তাহলিয়ায় খাদ্যসহায়তার অপেক্ষায় থাকা মানুষের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের ট্যাংক ও ড্রোন হামলায় অন্তত ৫৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে আরও প্রায় ২০০ জন।
ধুলোমাখা মেঝেতে বসে চিৎকার করে কাঁদছে ছোট্ট একটি মেয়ে, বিসান কুয়াইদার। ছোট ছোট হাতে বুকে জড়িয়ে ধরা তাঁর বাবার এক জোড়া জুতো। বিসানকে কিছুতেই শান্ত করা যাচ্ছে না। বাবাকে হারিয়েছে সে। বিসান ও তার ১০ ক্ষুধার্ত ভাইবোনের জন্য খাবার জোগাড় করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বাবা, শাদি কুয়াইদার।
ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় যেন বন্দুক তাক করে পাখির মতো ফিলিস্তিনিদের গুলি করে মারছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবারও গাজায় একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো গুলিতে অন্তত ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তৃতীয় দিনে প্রবেশ করেছে ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাত। দিন যত যাচ্ছে, এই সংঘাতে দুই পক্ষেরই প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। ইরানে অন্তত ৮০ জন ও ইসরায়েলে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে থামানোর উদ্দেশ্যে এটি একটি ‘প্রতিরোধমূলক হামলা’।
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের ব্যাপক সংঘাত চলছে গত শুক্রবার থেকে। এই সংঘাত বিশ্ব গণমাধ্যমের আলো কেড়ে নিয়েছে। আড়ালে পড়েছে গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধ। কিন্তু অঞ্চলটিতে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেমে নেই। সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে অন্তত ৫৫ হাজার ৩৬২ জন।
ইরানের সঙ্গে তীব্র যুদ্ধের মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, এক সেনা দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছে।